Customer Care: (+88) 013 21377766
Mail To: support@admindeal.com.bd

ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল শিল্প কোনটি?

Business

ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল শিল্পের মধ্যে ই-কমার্স অন্যতম। ফলে একজন লোক অফিসে পা রাখা ছাড়াই লাখ টাকা উপার্জন করতে সক্ষম হচ্ছে। আমাদের দিক নির্দেশনা আপনাকে দেখাবে কিভাবে যেকোন একজন মানুষ যেকোন স্থান থেকে তাদের দক্ষতাকে ব্যবহার করতে পারে এই নতুন ও লাভজনক খাতে। 


ই- কমার্স হলো সর্বকালের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল একটি শিল্পখাত। অফিসের দুয়ারে মাথা না ঠুকেও এই খাতে একজন মানুষ ছয় সংখ্যার উপার্জন নিশ্চিত করতে পারে। আমাদের এই নির্দেশিকা থেকে আপনারা জানতে পারবেন ই-কমার্স কি? কিভাবে এটি কাজ করে? কিভাবে ই-কমার্স শুরু করা যায়?


বর্তমান বিশ্বে ই-কমার্স একটি বড় জায়গা জুড়ে অবস্থান করছে। বিশেষ করে মহামারী পরবর্তী সময়ে মানুষ ই-কমার্সের সুবিধাগুলো সবচেয়ে ভালোভাবে অনুধাবন করতে পারছে। শীঘ্রই ট্রিলিয়ন ডলারের শিল্প হিসাবে নিজের আত্মপ্রকাশ নিশ্চিত করবে ই-কমার্স।

বিশাল পুজি ছাড়াই পন্য উৎপাদন ও বিপনন করার ক্ষমতা; এই সময়ে সুযোগের একটি নতুন দুনিয়া খুলে দিয়েছে তাদের জন্য- যারা নিজস্ব ব্যবসা শুরু করতে চায় এবং তা চালাতে চায়।


রিয়েল এস্টেট থেকে খুচরা দোকান সকল শিল্পই বর্তমানে ইন্টারনেট দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে। যার ফলে ই-কমার্স বর্তমান সময়ের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল শিল্প। দেখে যা মনে হয় ই-কমার্স এর প্রভাব কখনোই হ্রাস পাবে না। ঘরে বসেই ইনকাম করা বা নিজের ব্যবসা চালানোর ব্যাপারে যদি আপনার আগ্রহ থাকে তবে এই প্রতিবেদন আপনার জন্য। 


ই-কমার্স মার্কেটিং কি?


ই-কমার্স মার্কেটিং হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোন পণ্য বা সেবা বিক্রি করার কৌশল ও তার অনুশীলন। ই-মার্কেটিং বলেও একে উল্লেখ করা হয়। ই-ব্যাবসা শব্দটি খুব একটা ব্যবহার করা হয় না কারন এতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে কিন্তু ই-কমার্সের কৌশল বর্ননা করতে হলে ই-ব্যাবসা ট্যাকনিক্যালি সবচেয়ে সঠিক উপায়।


ভার্চুয়াল দুনিয়ায় যে কেউ, যে কোন স্থান থেকে ব্যাবসা পরিচালনা করতে পারে। এটি হতে পারে নিজের হাতে তৈরি করা পন্য বিক্রি করার মত সহজ অথবা আমাজন, ই-বে ’র মত জটিল। যাইহোক, এটি নিশ্চিত করে বলা যায় যে, ই-কমার্সে বিপনণের জগৎটি বর্তমানে বিশাল আকার নিয়েছে। 


ই-কমার্স কতটা বিশাল?


২০১৬ সালের একটি জরিপ অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী ই-কমার্সে খুচরা বিক্রয়ের পরিমান ছিলো ১.৯১ ট্রিলিয়ন ডলার যা বিশ্বব্যাপী খুচরা বিক্রয়ের শতকরা ৬ ভাগ। ২০১৬ সালেই প্রতি সেকেন্ডে মানুষ ৩,৫০০ ডলার ই-কমার্সে ব্যয় করেছে। ফলে ই-কমার্স ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল শিল্পে পরিনত হয়েছে। 


আপনি কখনো অফিসে পা না রেখেও আপনার ভাগ্য তৈরি করে নিতে পারবেন ই-কমার্সে। খুব শীঘ্রই ই-কমার্সের সূচকগুলোর বৃদ্ধির হার কমছে না। তার কারন আরও বেশি সংখ্যক মানুষ অনলাইনে পন্য কিনতে শুরু করেছে। অনলাইনে কত লোক পন্য কিনছে জানার জন্য ই-কমার্সের বিক্রয় সংক্রান্ত তথ্যগুলো না জানলেও চলবে। আপনি শুধু বাহিরে গিয়ে দেখুন মানুষ কি কিনছে তাহলেই প্রবনতাটি টের পাওয়া যাবে। 

একটি ই-কমার্স কোম্পানির জন্য মার্কেটিং কেন দরকার?


একটি ই-কমার্স কোম্পানির সাফল্য বা ব্যর্থতা নির্ভর করে মূলত মার্কেটিং এর উপর। অনেকে মনে করে প্রতিযোগীদের তুলনায় কম মূল্যে পন্য উৎপাদন ও বিক্রি করাই ই-কমার্স। পণ্যের উৎপাদন ও বিপনণ অবশ্যই জরূরী। কিন্তু গ্রাহকের নিকট তাদের প্রয়োজনীয় পণ্যের মার্কেটিং করার ক্ষমতা ছাড়া আপনি খুব বেশী দূর যেতে পারবেন না। 


আপনি যে পণ্য বা সেবা বিক্রি করেন না কেন, তা যদি সফলতার সাথে করতে চান তাহলে, আপনাকে আপনার পন্য এবং সেবা সম্পর্কে গ্রাহকের কাছে বলার সক্ষমতা থাকতে হবে। আর এ কারণেই মার্কেটিং এতো গুরুত্বপূর্ন। 


শুধু পণ্য বিক্রির চেয়ে ই-কমার্সে সফলতার জন্য মার্কেটিং বেশী গুরুত্বপূর্ন। যদিও মনে হয় মার্কেটিং এর ঝামেলা করার চেয়ে পণ্য বিক্রি করা সহজ কিন্তু সম্ভাব্য ক্রেতা খুজে বের করা ও তার কাছে পণ্যটি বিক্রি করার জন্য মার্কেটিং গুরুত্বপূর্ন। 


যদি আপনি আপনার পণ্য বা সেবা অল্প কিছু মানুষের নিকট বিক্রি করতে না পারেন তাহলে ই-কমার্সে আপনার টিকে থাকা কঠিন হবে। মার্কেটিং হলো সফলতার সেই চাবিকাঠি যার মাধ্যমে আপনি অনলাইনে ক্রেতা আকর্ষন করতে পারেন এবং অন্যকে আপনার পণ্য বা সেবা সম্পর্কে আগ্রহী করে তুলতে পারেন।

ব্যবসায় ব্রান্ডিং এর গুরুত্ব-


কিছু কিছু কোম্পানীর জন্য হয়তো ব্রান্ডের নাম খুব বেশী গুরুত্বপূর্ন নয় কিন্তু একটি ই-কমার্সে সাইটেরর জন্য ব্রান্ডিং খুবই গুরুত্বপূর্ন। আপনার প্রতিযোগীদের থেকে ব্রান্ডিং আপনার পণ্যকে আলাদা করে। অনলাইনে আপনি কিছুই বিক্রি করতে পারবে না যদি না মানুষ আপনাকে চেনে বা জানে। 


অনলাইনে পন্য বা সেবা বিক্রি করার আগেই ব্রান্ডিং শুরু করতে হয়। কারন ই-কমার্সে মানুষ এমন সব মানুষের নিকট হতে পণ্য কিনতে অভ্যস্ত হয় যার সাথে কখনোই তার দেখা হয়নি বা ভালোভাবে চেনে না। আপনি যদি একটি ছোটো ব্যবসা পরিচালনা করে থাকেন তাহলে ব্রান্ডিং ও মার্কেটিং আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন। পন্য বিক্রি করার আগে কার্যকরি উপায়ে নিজের প্রমোশন করতে হবে এবং ই-কমার্সে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। 


বিভিন্ন প্রকার ই-কমার্স ব্যবসা-


১। ওয়েবসাইট ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্টঃ 


ওয়েবসাইট ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট ই-কমার্স ও সমগ্র ইন্টারনেট দুনিয়ায় বিশাল একটি ক্ষেত্র। যদিও এই ক্ষেত্রের প্রতিযোগীদের বিপরীতে টিকে থাকা কঠিন। তবে মানসম্পন্ন দক্ষতা থাকলে অনলাইনে বেশ ভালো উপার্জন করা সম্ভব। 

২। 3D প্রিন্টিংঃ 


থ্রী ডি প্রিন্টিং এর প্রতি মানুষের আগ্রহ দিনদিন বাড়ছে ফলে এ বিষয়ে দক্ষতা থাকলে তা অর্থ উপার্জনের দূর্দান্ত সুযোগ হতে পারে।

৩। ছোট ব্যবসার জন্য প্লাটফর্ম


ক্ষুদ্র ব্যবসায় ই-কমার্স সেবা একটি লাভজনক বিজনেস মডেল। উদাহরণ হিসাবে আমরা আমাজনের কার্যক্রম অনুসরন করতে পারি। তুলনামূলকভাবে এটি আসলেই অল্প শ্রমে বেশী অর্থ উপার্জনের সহজ উপায়। কেননা ই-কমার্স সরাসরি ভোক্তার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে। 

৪। বই প্রকাশনায় ই-কমার্সঃ


প্রকাশক হিসাবে ই-কমার্সে বেশ ভালো উপার্জন করা সম্ভব। যদিও এ ক্ষেত্রে সাধারন বইয়ের মত সহজ হয় না বিষয়গুলো। 

৫। গ্রাফিক্স ডিজাইন ও পণ্যের ফটোগ্রাফি


ই-কমার্সে এই খাতটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই খাতে যদি মৌলিক দক্ষতা থাকে তবে পণ্য বিক্রি করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। বহু ক্লায়েন্ট পন্যের ব্রান্ডিং বা পন্যের উপর ছাপানো ছবির জন্য মার্কেট প্লেসে আসেন। 

ই-কমার্স মার্কেট ও কিছু ট্রেন্ডসঃ


এখন যেহেতু আপনি ই-কমার্স ও এটি কিভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে কিছু মৌলিক বিষয় জানেন, আসুন ই-কমার্সে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনার দিকে দৃষ্টি দেয়া যাক। 

প্রথম দিন থেকে আজকে পর্যন্ত ই-কমার্সে বহু পরিবর্তন হয়েছে। আমাজন যখন নতুন কোম্পানি ছিলো তারা অনলাইনে সিডি ক্যাসেট ও বই বিক্রি করতো। কিন্তু তা থেকে তাদের খুব বেশি লাভ হতো না। বরং তারা তাদের ওয়েবসাইটের হোস্টিং থেকে বেশি উপার্জন করতে থাকে। 

ই-কমার্স মার্কেটিং এ সোশাল মিডিয়ার ভূমিকাঃ


আজকাল প্রায় প্রতিটি শিল্পে সোশাল মিডিয়ার গুরুত্ব রয়েছে। ই-কমার্সের ক্ষেত্রেও তা ভিন্ন না।। সোশাল মিডিয়া ব্যবসার বিপনণ ব্যাবস্থাকে অনেক সহজ করে তুলেছে। আজকে সোশাল মিডিয়া ব্যবহার করে সারা বিশ্বের সম্ভাব্য সকল ক্রেতার কাছে পৌছানো সম্ভব হচ্ছে। শুধু মাত্র পোস্ট তৈরি করা ছাড়াও, লিংক শেয়ার ও ব্লগিং করে আরও বেশী মানুষের নিকট পৌছানো সম্ভব। 


পূর্বে সোশাল মিডিয়া ই- কমার্সের গুরুত্বপূর্ন অংশ ছিলো না। কেননা কোম্পানির তথ্য জানার জন্য খুব বেশী পথ তখন খোলা ছিলো না। এখন একটি পোস্ট তৈরির মাধ্যমে একই সময়ে হাজার হাজার মানুষের নিকট পৌছে যাওয়া সম্ভব।

ই-কমার্স মার্কেটিং এ স্পন্সর কন্টেন্টঃ


আপনার পণ্য সম্পর্কে অন্য চ্যানেলে যদি কেউ কথা বলে তাহলে সম্ভাব্য ক্রেতার নিকট আপনার পণ্য সম্পর্কে ভালো ধারণা তৈরি হবে। এর জন্য আপনি অর্থ প্রদান করতে পারেন। যদিও ব্যবসা সফল করতে হলে এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। মানুষ যদি আপনাকে বিশ্বাস না করে তাহলে সে আপনার সাথে ব্যাবসা করবে না। একারনে সর্বচ্চো সচেতন থাকতে হবে যেন আপনার পন্যের বিজ্ঞাপন পন্যের সঠিক প্রতিফলন ঘটায়। 


সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং এর আরেকটি পন্থা হলো ইন্সটাগ্রামে বিজনেসের পেজ খোলা। এই পেজ থেকে ছবি নিয়ে পন্যে ব্রান্ডিং ও মার্কেটিং করার মাধম্যে ব্যবসাকে আরও বড়ো করে তোলা সম্ভব।